স্বর্ন সবার কাছেই কম-বেশি থাকে। গত ৩০ জুন ২০১৯-তে একজন করদাতার হাতে যে পরিমান সোনা থাকবে তা তার আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করতে হবে।
আয়কর রিটার্নে আয়-ব্যআয়-ব্যয় উল্লেখ করার পাশাপাশি সম্পদ ও দায়ের বিবরণীও আলাদাভাবে জমা দিতে হয়। তবে এই বিবরণী সবার জন্য বাধ্যতামূলক না। সাধারনত যাদের মোট পরিসম্পদের পরিমান পচিশ লাখ টাকার উপরে কেবলমাত্র তাদেরকেই সম্পদ ও দায় বিবরণী দাখিল করতে হয়। কেউ চাইলে স্ব-প্রণোদিতভাবে জমা দিতে পারেন।
সোনা আপনি বিভিন্ন উপায়ে পেতে পারেন। যেমন, আপনি নিজে ক্রয় করতে পারেন বা প্রিয়জনদের কাছ থেকে উপহার পেতে পারেন। আপনি যে উপায়েই সোনার অধিকারী হোন না কেন রিটার্নে টাকার পরিমান কি উল্লেখ করবেন তা নিয়ে একটি জটিলতা দেখা দেয়।
সোনা ক্রয়
ক্রয়কৃত সোনা দেখানো সহজ। আপনি সরাসরি যে টাকা দিয়ে কিনেছেন তা উল্লেখ করবেন। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে আপনি যে পরিমান সোনা কিনেছেন তার ক্রয় মূল্য এবং সাথে গত রিটার্ন দাখিল করার সময় যে মূল্য দেখিয়েছিলেন তা যোগ করে উল্লেখ করবেন। তবে আপনি যদি বিক্রি করে থাকেন বা কাউকে উপহার দিয়ে থাকেন তাহলে তা বাদ দিয়ে যেটূকু আপনার কাছে আছে কেবলমাত্র সেটুকুর মূল্যই লিখবেন।
আপনি যেমন আপনার প্রিয়জনকে সোনা উপহার দিতে পারেন তেমনি আপনি আপনার প্রিয়জনের কাছ থেকেও সোনা উপহার হিসেবে পেতে পারেন।
উপহার পাওয়া সোনার মূল্য কতো দেখাবেন?
আপনি যেটা কিনেছেন সেটা খুব সহজেই রিটার্নে মূল্যটা লিখে দিয়েছেন। কিন্তু উপহার পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনিতো আসল দাম নাও জানতে পারেন। সেক্ষেত্রে কি করবেন?
এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয়, আপনি যেটুকু উপহার পেয়েছেন তার পরিমান উল্লেখ করে টাকার ঘর ফাকা রাখা। এবং মন্তব্য লিখে দিতে পারেন, উপহার হিসেবে পেয়েছেন। আপনার যদি আগের বছরগূলোতেও এমন উপহার পাওয়া সোনা থাকে তাহলে সবটুকুর পরিমান উল্লেখ করে টাকার ঘর ফাকা রেখে দিবেন।
তবে কেউ কেউ উপহার পাওয়া সোনার মূল্য উল্লেখ করতে চান বা বলে থাকেন। সেক্ষেত্রে আপনি আনুমানিক একটা মূল্য ধরে লিখে দিতে পারেন। এর ফলে আপনার নীট সম্পদের পরিমান বেড়ে যাবে। এবং এভাবে বেড়ে যদি ২.২৫ কোটি টাকা অতিক্রম করে তাহলে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট হারে সারচার্জ দিতে হবে। এজন্য যেহেতু আপনি উপহার পাওয়া সোনার প্রকৃত মূল্য জানেন না তাই না লেখাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো শুনে থাকবেন, সোনার পরিমান যা আছে তার চেয়ে বাড়িয়ে দেখানোর কথা বলে থাকেন। দেখা যায় একজন করদাতার পরিবারে হয়তো দশ ভরি সোনা আছে। কিন্তু তিনি রিটার্নে দেখিয়েছেন পঞ্চাশ ভরি যার আসলে অস্তিত্বই নেই।
বেশি সোনা দেখালে কি কোন লাভ আছে?
লাভের থেকে ঝামেলাই বেশি। কারন যেটা আপনার নেই তা দিলে প্রশ্ন উঠতে পারে। ধরুন, আপনি ৪৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন। স্বামী-স্ত্রী মিলে দুইজনের সংসার। এই টাকা পেয়ে সংসার চালিয়ে কিভাবে আপনি পঞ্চাশ ভরি সোনার মালিক হলেন?
এই প্রশ্ন আয়কর কর্মকর্তা আপনাকে করতেই পারে। এর সঠিক উত্তর না দিতে পারলেই আপনি সমস্যায় পড়তে পারেন।
তবে কেউ কেউ বিয়েতে অনেক সোনা উপহার পেয়ে থাকেন। এক্ষ্রত্রে যে বছর আপনি বিয়ে করে সোনা পেয়েছেন সে বছর উল্লেখ করে দিবেন। এক্ষেত্রেও আপনি যেহেতু মূল্য জানেন না তাই টাকার ঘর ফাকা রাখতে পারেন।
রিটার্নে আপনাকে একটি প্রতিপাদন দিতে হয় যেখানে লেখা থাকে, রিটার্ন এবং বিবরণী ও সংযুক্ত প্রমাণাদিতে প্রদত্ত তথ্য আমার বিশ্বাস এবং জানামতে সঠিক এবং সম্পূর্ণ। এর নিচেই আপনাকে স্বাক্ষর করতে হয়। সহজ কথা হলো, আপনার কাছে যা আছে তাই রিটার্নে দাখিল করবেন। এর বেশি বা কম করতে গেলেই আপনি আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন।
Comments
Post a Comment