প্রশ্ন: একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট রিটার্ণ বা দাখিলপত্র (মূসক-9.1) দাখিলের নিয়ম কী?
যদি কোন কাজ না থাকে অথবা বিল না পেয়ে থাকে তাহলেও কী রিটার্ণ দাখিল করতে হবে? আমি তো বিগত কয়েক মাসের রিটার্ণ দাখিল করিনি আমার করণীয় কী? অনলাইনে কী রিটার্ণ দাখিল করা যাবে? সরবরাহের বিপরীতে উৎসে কর্তন সনদ মূসক-6.6 পেলে তা কিভাবে সমন্বয় করতে হবে? 6.6 না পেলে করণীয় কী? অনেক ক্ষেত্রে ফান্ড না থাকলে বিল পেতে এক বছরের বেশী সময় লেগে যায় সেক্ষেত্রে করণীয় কী?
উত্তর:
বিদ্যমান আইন ও বিধি মোতাবেক ঠিকাদারের ক্ষেত্রে দাখিলপত্রে তার সরবরাহ এবং উৎসে কর কর্তন সমন্বয়ের জন্য যে পদ্ধতি তা নিম্নরূপ:
১) প্রথমত ঠিকাদারকে তার সরবরাহের বিপরীতে মূসক চালান-6.3 ইস্যু করতে হবে।
২) যে মাসে সরবরাহ করেছে বা মূসক চালান ইস্যু করেছে সে মাসের দাখিলপত্রে উক্ত সেবার বিপরীতে আউটপুট ট্যাক্স হিসেবে প্রদর্শন করতে হবে। যদি যে মাসে সরবরাহ সে মাসেই মূসক ৬.৬ পেয়ে থাকেন তাহলে দাখিলপত্রে মূসক-৯.১ এ প্রথমে আউটপুট ট্যাক্স (ভ্যাট রেট এর ভিত্তিতে ১৫% হলে নোট ৪ অন্যান্য হার হলে নোট ৭ এ) হিসাবে প্রদর্শন করতে হবে এবং মূসক ৬.৬ এর ভিত্তিতে দাখিলপত্র মূসক-9.1 এর নোট ২৯ এর মাধ্যমে হ্রাসকারী সমন্বয় করতে হবে তাহলে প্রদেয় এবং পরিশোধ সমান হয়ে যাবে ফলে তাকে নতুন করে মূসক পরিশোধ করতে হবে না। একই মাসে যদি তিনি উৎসে কর কর্তন সনদ ৬.৬ না পান তাহলে তিনি যে মাসে বা করমেয়াদে সরবরাহ করেছেন বা মূসক চালান ইস্যু করেছেন সে মাসের দাখিলপত্রে ধারা ৩৩ মোতাবেক তার সরবরাহের ওপর প্রযোজ্য কর পরিশোধ করবেন।
২) একই মাসে সনদ না পেলে যে মাসে সরবরাহ করেছেন সে মাস হতে পরবর্তী ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে যদি তিনি উৎসে কর কর্তন সনদ মূসক-6.6 পেয়ে থাকেন তাহলে তিনি দাখিলপত্রের নোট 29 এর মাধ্যমে হ্রাসকারী সমন্বয় গ্রহণ করতে পারবেন। সরবরাহের বা মূসক চালান ইস্যুর পরবর্তী ছয় মাস অতিবাহিত হয়ে গেলে তা আর সমন্বয়ের সুযোগ থাকবে না। হ্রাসকারী সমন্বয় গ্রহণ করতে হলে তাকে অবশ্যই উক্ত সরবরাহ আউটপুট ট্যাক্স হিসাবে দাখিলপত্রে প্রদর্শন করতে হবে।
৩) প্রতি মাসে তাকে কাজ না থাকলেও শূন্য দাখিলপত্র পেশ করতে হবে। দাখিলপত্র সময়মত পেশ না করলে প্রতি মাসের জন্য দশ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে।
৪) যারা বিগত সময়ের দাখিলপত্র পেশ করেননি তারা দ্রুত দাখিলপত্র পেশ করতে হবে। আপনার সরবরাহ না থাকলে শূন্য দাখিলপত্র অনলাইনে ঘরে বসেই মোবাইল বা যেকোন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে কয়েকটা ক্লিক এর মাধ্যমেই দাখিল করতে পারবেন। জুন/19 হতে ডিসেম্বর/19 এবং মার্চ/20 ও এপ্রিল/2020 পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই দাখিলপত্র পেশ করতে পারবেন।
৫) সরবরাহ বা বিলের বিপরীতে মূসক-6.6 সনদ না পেলে তা ইস্যু করার জন্য কর্তনকারী কর্তৃপক্ষকে বলবেন। তথাপি উক্ত সনদ ইস্যু না করলে ট্রেজারি চালানের মূল কপি দিতে বলবেন নতুবা ঠিকাদারকে উক্তবিলের বিপরীতে পুনরায় ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে।
৬) বিল পেতে দেরী হলে মূসক চালান যে মাসে ইস্যু করেছেন সে মাস হতে অবশ্যই পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে উক্ত বিল পরিশোধ এবং মূসক 6.6 পেতে হবে। নতুবা উক্ত টাকা সমন্বয় করা যাবে না।
৭) মূসক নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সরবরাহের বিপরীতে মূসক চালান ইস্যু না করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। তাই সকল নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই তার সরবরাহের বিপরীতে মূসক চালান 6.3 ইস্যু ও সংরক্ষণ করতে হবে।
Comments
Post a Comment