সময় ও নদীর স্রোত কাহারো জন্যই অপেক্ষা করে না। ঠিক একইভাবে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সময় চলে এসেছে। আমরা চাই বা না চাই, আমাদের ভালো লাগুক বা না লাগুক তথাপি আইনের অনুশাসন ও সুনাগরিকের দায়িত্ব পালন সরূপ আমাদের প্রত্যেক করদাতাদের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যাদের আয় আছে এবং যাদের আয় নাই কিন্তু ই-টিন আছে তাদের প্রত্যেকেই আবশ্যিকভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। যেহেতু, আয়কর রিটার্ন দাখিল করতেই হবে তাই কৌশলী হওয়ার বিকল্প অন্য কিছু নেই। কেননা, শুধুমাত্র কৌশলী হলেই আমরা আমাদের করের বোঝা শুধু কমাতেই পারব না বরঞ্চ আমরাও যেকোন ঝক্কি ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকব। বিগত বছরে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার জন্য ১০টি নিঞ্জা টেকনিক প্রকাশ করেছিলাম। লিংক-
এই বছর আয়কর রিটার্ন দাখিল করার জন্য আরো ১০টি নিঞ্জা টেকনিক অর্থ্যাৎ পূর্ব সতর্কতামূলক নিয়ম সম্পর্কে অবহিত হব।
নিঞ্জা টেকনিক-১- বিসমিল্লায় গলদ (নয়া করদাতাদের জন্য টেকনিক)-
যারা এক্কেবারে নয়া করদাতা তারাই সবচেয়ে বেশী ভুল-ভ্রান্তির শিকার হয়। কেননা কার কাছে যাবেন কি করবেন কিভাবে করবেন কিছুই জানেন না। পরিশেষে, গোজামিল করে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া হয়। নয়া করদাতাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, আতংকিত হওয়ার কিছু নাই। আপনাদের জন্য প্রথম টেকনিক হচ্ছে - সর্বপ্রথম আপনার আয়ের খাতটি বের করুন। যেমন ধরুনঃ আপনি যদি চাকুরীজীবী হন তাহলে যেই কোম্পানিতে চাকুরী করেন সেখান থেকে বেতন বিবরণী (স্যালারি সার্টিফিকেট) সংগ্রহ করুন। তারপর আপনি আপনার অর্জিত সম্পত্তির (যেমনঃ জমি-জমা, ব্যাংকে জমানো টাকার হিসাব পত্র ইত্তাদি) একটি ফিরিস্তি (লিস্ট) তৈরি করুন। এরপর যদি দেখেন আপানার আয়ের সীমা ৩ লক্ষ টাকার নিচে এবং গণনাকৃত ট্যাক্স শূন্য হয় তাহলে আর দেরি না করে এক্ষুনি আপনার ট্যাক্স রিটার্ন পূরণ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দৌড় দিয়ে গিয়ে ট্যাক্স অফিসে জমা করে আসেন।
নিঞ্জা টেকনিক-২- একের ভিতর সব (সকল শ্রেণীর করদাতাদের জন্য টেকনিক)-
একটি ট্যাক্স রিটার্নে শুধু আয়ের হিসাবই থাকে না বরঞ্চ একজন করদাতার ইহ-জাগতিক সকল আর্থিক হিসাব নিকাশ এই রিটার্নে লিপিবদ্ধ থাকে। আপনারা যখন ট্যাক্স রিটার্ন পূরণ করবেন তখন ট্যাক্স রিটার্নকে মোট ৬ টি ভাগে ভাগ করে নিবেন তাহলে পূরণ করতে সুবিধা হবে। যথাঃ ১) আয়ের হিসাব {কোন কোন খাত থেকে আয় হচ্ছে যেমন, বেতন খাত, FDR এর মুনাফা, করমুক্ত আয় (ফ্রিলান্সারদের আয়) ইত্যাদি}। ২) ব্যয়ের খাত (কোন কোন খাতে ব্যয় হচ্ছে যেমন, পারিবারিক খরচ, বাড়ি ভাড়া, সন্তানদের লেখাপড়া ইত্যাদি)। ৩) পূর্ববর্তী সম্পদ (৩০ শে জুন ২০২০ পর্যন্ত যেই সম্পদ গুলো অর্জিত হয়েছে, যেমন, জমি-জমা, ব্যাংকের টাকা, গাড়ি ইত্যাদি)। ৪) বর্তমান সম্পদ (১ লা জুলাই ২০২০ থেকে ৩০ শে জুন ২০২১ পর্যন্ত অর্জিত সম্পদ, যেমন, জমি-জমা, ব্যাংকের টাকা, গাড়ি ইত্যাদি)। ৫) দান ও ঋণ ৬) বিনিয়োগ (সরকার নির্ধারিত বিনিয়োগের খাত, যেমন, সঞ্চয় পত্র, জীবন বীমার প্রিমিয়াম ইত্যাদি)। মোদ্দকথা, একটি ট্যাক্স রিটার্নে সাম্ভাব্য সকল তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করুন ।
নিঞ্জা টেকনিক-৩- প্রেমে পড়া বারণ কারণে অকারণ (সকল শ্রেণীর করদাতাদের জন্য টেকনিক)-
আমরা স্কুল বা কলেজে পড়ার সময় একজনের খাতা আরেকজনকে না দেখালেও ট্যাক্স রিটার্ন পূরণের ক্ষেত্রে সেই নিয়মের ধারে কাছে যাই না। আমার ব্যক্তিগত অভিজতা বলে, ট্যাক্স রিটার্ন পূরণের সময় আমাদের বড় ভাই, অফিসের কলিগ, বন্ধুবান্ধব আমরা সবাই একজন আরেকজনের রিটার্ন দেখে না বুঝে পূরণ করি। যেমনঃ ধরুন, অফিসের কলিগ বিনিয়োগ এর ঘরে লিখেছে প্রাইজ বণ্ড ২ লাখ, আমিও লিখেছি ২ লাখ। বড় ভাই সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়েছে ২০ লাখ আমিও দিয়েছি ২০ লাখ। এছাড়াও একটি প্রচলিত কথা আছে, প্রথম রিটার্নে সারা জীবনের সঞ্চয় বেশি দিতে হয়। এখন আমার প্রশ্ন হল, এই বছর আয় শুরু করার আগে যদি আমার সারা জীবনের সঞ্চয় ২০ লক্ষ টাকা থাকে তাহলে সেই টাকা আমি কিভাবে আয় করেছি (উৎস কি)? এই টাকা এতদিন আমি কোথায় রেখেছি? নিশ্চয়ই ঘরের আলমারিতে রাখি নাই। যদি ব্যাংকে রাখি তাহলে ব্যাংকের মুনাফার হিসাব কোথায়? পরিশেষে আমাদের দাখিলকৃত রিটার্নটি হয়ে যায় “উল্টা পাল্টা 69”। আপনি নিশ্চিত থাকুন যে, এই ভাবে অযাচিত তথ্যের সম্মিলনের কারণে আপনি নানা ধরণের প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন হয়ত আজ না হয় কাল কিন্তু হবেনই। সহজ কথায়- অন্যের ট্যাক্স রিটার্নের প্রেমে পড়া বারণ কারণে অকারণ। তাই, নিজের অর্জিত সঠিক সম্পত্তির তথ্য দিয়ে রিটার্ন পূরণ করুন অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নয়।
নিঞ্জা টেকনিক-৪- চাকুরীটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছ (চাকুরীজীবীদের জন্য টেকনিক)-
আমাদের দেশে ট্যাক্স আইনে চাকুরীজীবীদের আয়কর সাধারণত দুই ভাবে গণনা করা হয়। একপ্রকার সরকারী চাকুরীজীবী এবং আরেক প্রকার বেসরকারি চাকুরীজীবী। দুই প্রকার চাকুরীজীবীদেরই রিটার্ন জমা দেয়ার সময় বেতন বিবরণী, কর কর্তন সনদ (প্রতি মাসে রিটার্ন জমা দেয়ার সময় অফিস থেকে একটি নির্দিষ্ট অংশ ট্যাক্স কেটে রাখে তার সার্টিফিকেট), ব্যাংক বিবরণী (যেই ব্যাংক একাউন্টে আপনার বেতনের টাকা প্রবেশ করেছে), রেয়াত দাবি করলে জীবন বিমার প্রিমিয়াম, সঞ্চয় পত্র ইত্যাদির বিবরণী ট্যাক্স রিটার্নের সাথে জমা দিবেন। এছাড়াও আলাদা একটি কাগজে আপনার আয়ের ট্যাক্স গণনা করে দিবেন।
নিঞ্জা টেকনিক -৫- আহারে! ঢাকা শহরে যদি একটা নিজের বাড়ি হইত তাইলে কি জীবনে আর কিছু লাগত! খালি সুখ আর সুখ (বাড়িওয়ালাদের জন্য টেকনিক)-
স্বপ্নের বাড়ি হওয়ার পর আমার বাড়ীওয়ালা আঙ্কেল আক্ষেপ নিয়ে আমাকে বললেন- “বাবারে, যত সম্পদ তত জ্বালা, তারউপর আবার ট্যাক্সের জ্বালা। বাড়ি না থাকতেই তো শান্তিতে ছিলাম। “আমার বাড়ীওয়ালা আঙ্কেল এর জন্য শান্তিতে থাকার পরামর্শ হল- দয়া করে সঠিক ভাড়া প্রদর্শন করুন, বাসা ভাড়া যদি মাসিক ২৫ হাজার টাকার উপরে হয়, সেক্ষেত্রে শুধু বাড়ী ভাড়ার জন্য আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রাখুন এবং বছর শেষে ব্যংক বিবরণী (Bank statement) জমা করুন, ভাড়াটিয়ার সাথে ভাড়ার ক্ষেত্রে চুক্তিনামা তৈরি করুন (৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে), ভাড়ার চুক্তিতে উল্লেখিত টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখুন, ভাড়াটিয়াকে ভাড়া বাবদ রশিদ প্রদান করুন, ভাড়ার অগ্রিম (Advance) টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে গ্রহণ করুন, যদি বাসা খালি যায় অর্থাৎ বাসা ভাড়া নাও হয় সেই তথ্যটি আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করুন। এছাড়াও, বাসা যদি বাণিজ্যিক হয় তাহলে ভাড়ার ৩০% এবং আবাসিক হলে ভাড়ার ২৫% মেরামত বাবদ বাদ দিতে পারবেন এবং কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে না। পাশাপাশি, পৌরকর পরিশোধ করুন (ট্যাক্স এর ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন), যদি লোন নিয়ে বাড়ি করে থাকেন তাহলে প্রতি বছর লোন পরিশোধের বিবরণী (Bank থেকে Bank statement এ interest amountও principal amount আলাদা করে নিবেন) সাথে জমা দিবেন এবং একই সাথে সমগ্র তথ্যদি একত্রিত করে আলাদা কাগজে হিসাব করে দিবেন।
নিঞ্জা টেকনিক-৬- যৌবনের সঞ্চয় বৃদ্ধকালের অবলম্বন (সঞ্চয়পত্রের জন্য টেকনিক) -
সঞ্চয়পত্রের সুদের ট্যাক্স আলাদা গননা করতে হবে। এই সুদের উপর পুনরায় কোন ট্যাক্স দিতে হয় না। যেমন ধরুন, রহিম এর বেতন থেকে আয় ২লাখ ৯০হাজার টাকা এবং সঞ্চয়পত্রের সুদ থেকে আয় ১লাখ টাকা। তথাপি, রহিমের মোট আয় ৩ লাখ টাকার উপরে কিন্তু সঞ্চয় পত্রের মুনাফা থেকে ১০ হাজার টাকা ট্যাক্স কর্তন করার কারণে তাকে আর পুনরায় ট্যাক্স দিতে হবে না। কারণ, রহিমের নিয়মিত আয় ৩লাখ টাকার নিচে এবং সঞ্চয়পত্রের সুদের আয় থেকে ট্যাক্স কেটে রাখা হয়েছে , যা চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু, রহিমকে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে হবে। সঞ্চয়পত্রের ট্যাক্স দেয়ার সময় সঞ্চয়পত্রের সার্টিফিকেট (মুনাফা ও ট্যাক্স কর্তন আলাদা করা থাকবে/যেই ব্যাংক বা পোস্ট অফিস থেকে ক্রয় করেছেন সেখান থেকে সঞ্চয়পত্রের সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে) অবশ্যই জমা দিতে হবে এবং একই সাথে সঞ্চয়পত্রের টাকা ব্যাংকের যেই একাউন্টে প্রবেশ করে সেই একাউন্টের হিসাব বিবরণী।
নিঞ্জা টেকনিক-৭- পড়েছি মোগলের হাতে খানা খেতে হবে সাথে (ব্যবসায়ীদের জন্য টেকনিক)-
যারা ব্যবসা করেন কিংবা যাদের ট্রেড লাইসেন্স আছে তাদের রিটার্ন জমা দেয়া ব্যধ্যতামুলক। রিটার্ন জমা না দিলে ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে বাঁধার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই ব্যবসা লাভ হোক আর লোকসান হোক রিটার্ন জমা দিতেই হবে। রিটার্ন জমা দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ব্যাংক একাউন্ট এর প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, আপনি যে আয় ব্যয়ের হিসাব (Income statement) দেখাচ্ছেন তা যেন ব্যাংক একাউন্টের সাথে সামাঞ্জস্য পূর্ণ হয়। ব্যবসায়ীরা ট্যাক্স রিটার্নের সাথে অবশ্যই একটি Income statement ও Balance sheet তৈরি করে দিবেন এবং ট্রেড লাইসেন্সের কপি ও ট্রেড লাইসেন্সের ফি ও ট্যাক্স (উৎসে কর) যেই চালানের মাধ্যমে জমা দিয়েছেন তার একটি কপি রিটার্নের সাথে জমা দিবেন।
নিঞ্জা টেকনিক-৮- গোপন কথাটি রবে না গোপনে (গুপ্তধনের টেকনিক)-
সম্পূর্ণ বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে তুলে ধরা হল। করিম চাচা (কাল্পনিক চরিত্র) ১২ বছর যাবৎ ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেন এবং সবাইকে গর্ব করে বলে বেড়ান আমি একযুগ ধরে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেই। প্ক্ষান্তরে, যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, তিনি কত টাকা ট্যাক্স দেন? তিনি গলার স্বর নরম করে বললেন, জিরো ট্যাক্স। তাকে যখন আবার প্রশ্ন করা হল, আপনার গুলশানের ৬ তলা বাড়ি, দামি গাড়ি এগুলা কি ট্যাক্স রিটার্নে দেখানো আছে? তার জোরালো উত্তর, এগুলা দেখানো দরকার কি? আমি কি অবৈধ পয়সা দিয়া বাড়ি করছি? ১২ বছর যাবৎ ট্যাক্স রিটার্ন দিতাছি কেউ কোনদিন ধরে নাই আর এখন কে ধরব? এই সব চাচাদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, প্রতি বছর সম্পত্তি গোপন করার জন্য অসংখ্য মামলা হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে নিশ্চয়ই তারা সবাইকে বলে বেড়াবে না। হার্ট এটাক প্রতিদিন হয় না জীবনে একবারই হয়, আর যখন হয় তখন সব শেষ। ঠিক একইভাবে আপনার কষ্টার্জিত সম্পত্তি গোপন করার জন্য আপনার নামে যখন মামলা হবে তখন সব খেলা শেষ। তাই, করিম চাচার জন্য দুইটা পথ খোলা। এক নম্বর, আইনানুযায়ী ট্যাক্স পরিশোধ করে সব সম্পত্তি বৈধ করে নিয়ে শান্তিতে ঘুমানো। অথবা, নম্বর দুই, হার্ট এটাক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা অর্থাৎ ট্যাক্স অফিস গুপ্তধনের সন্ধান করে নোটিস দিবে তার জন্য প্রতিদিন অপেক্ষা করা। তাই, করিম চাচার জন্য আমার পরামর্শ হল- Prevention is better than cure অর্থাৎ এক নম্বর পথে হাঁটুন। অন্যথায় সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড় হয়ে দাঁড়াবে।
নিঞ্জা টেকনিক-৯- আমার টাকা আমি দিব যাকে খুশি তাকে দিব, যেভাবে খুশি সেভাবে দিব (দান ও ঋণের জন্য টেকনিক)
টাকা আমার হলেও ট্যাক্স আইনানুযায়ী আমি যাকে খুশি, যেভাবে খুশি দিতে পারি না। দিলেও ট্যাক্স আইনানুযায়ী হতে হবে। তথাপি,আইনানুযায়ী দান করা যাবে- পিতা-মাতা ও সন্তান; স্বামী ও স্ত্রীকে। দান যদি ৫ লক্ষ টাকার বেশী হয় তাহলে অবশ্যই ব্যাংকিং চ্যানেলের উপস্থিতি থাকা বাধ্যতামূলক অর্থাৎ একজনের ব্যাংক থেকে আরেকজনের ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার হবে। ঠিক একই ভাবে আমি যদি ঋণ নেই এবং তা যদি ৫ লক্ষ টাকার বেশী হয় তাহলে অবশ্যই ব্যাংকিং চ্যানেলের উপস্থিতি থাকা বাধ্যতামূলক অর্থাৎ একজনের ব্যাংক থেকে আরেকজনের ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার হতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, ৫ লক্ষ টাকার নিচে ঋণ নিলে তা অবশ্যই ৩ বছরের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। দানের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং চ্যানেলের পাশাপাশি দানের ঘোষণাপত্র (Declaration) দিতে হবে।
টেকনিক-১০ (করমুক্ত আয়ের জন্য টেকনিক)
যারা করমুক্ত আয় করেন যেমনঃ ফ্রিলান্সার কিংবা যারা বিদেশে চাকুরী করে বৈদেশিক মুদ্রা আনয়ন করেন তাদের খেয়াল রাখতে হবে তাদের আয় করমুক্ত, কিন্তু রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। আইনানুযায়ী রিটার্ন দাখিল না করলে করমুক্ত আয় করমুক্ত হিসেবে গন্য হবে না অর্থাৎ রিটার্ন দাখিল না করলে করমুক্ত আয় করযোগ্য আয় হিসেবে গণ্য হতে পারে।
ফ্রি টেকনিক- কাঙালের কথা বাসি হলে ফলে (সকল করদাতাদের জন্য টেকনিক)
আল-কোরানের একটি শব্দ ‘ইকরা’ অর্থাৎ পড়। তাই আমিও বলবো পড়ুন। ট্যাক্স রিটার্ন আপনার নিজস্ব সম্পত্তি তাই ভুল হলে আপনাকেই ভুগতে হবে। রিটার্ন পূরণ করার আগে আয়কর নির্দেশিকা, আয়কর পরিপত্র ও আয়কর অধ্যাদেশ ভালো ভাবে বেশ কয়েকবার মনোযোগ দিয়ে পড়ুন আর তা নাহলে, আমাদের ট্যাক্স রিটার্নের অবস্থা হবে, “সর্বাঙ্গে ব্যথা ওষুধ দেব কোথা”। তখন যার কাছেই যান না কেন “সময় গেলে আর সাধন হবে না”। সুতরাং সময় থাকতে হও সচেতন।
পরিশেষে বলতে হয়, যদিও ৩০ নভেম্বর আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার শেষ সময়, অর্থাৎ এই নয় যে, নভেম্বরে রিটার্ন জমা দিতে হবে। শেষ সময়ের জন্য অপেক্ষা না করে আগভাগেই রিটার্ন তৈরি করে জমা দিন।
মোঃ সাহারুল ইসলাম, এম বি এস (হিসাব বিজ্ঞান), এল এল বি, আইটিপি
আয়কর আইনজীবী
01717521866
Comments
Post a Comment