Port: বন্দর কাস্টমস আইন, ১৯৬৯ এর সেকশন ৯,ও ১০ ধারা অনুযায়ী ঘোষিত কোন এলাকাই হলো বন্দর। Sea Port বা সমুদ্র বন্দর হলো এমন স্থান যেখান থেকে সমুদ্র পথে গমনাগমনকারী জাহাজের পন্য ও যাত্রী Loading unloading করা হয়। সাধারণত সমুদ্র বন্দর সমুদ্রের তীরবর্তী স্থানে স্থাপিত হয়। তবে সমুদ্র থেকে অনেক দূরবর্তী ভেতরের দিকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বন্দর দেখা যায়, যেমন Hamburg (Germany), Manchester (UK), Mongla (Bangladesh) অন্যদিকে Harbour হলো পোতাশ্রয়, মানে Harbour is a sheltered port area বা বলা যায় পোতাশ্রয় হলো জাহাজ নিরাপদে নোঙর করে বন্দরে মধ্যে আশ্রয়ের কোন স্থান। যেখানে জাহাজ নিরাপদে থাকতে পারে আবার পন্য লোড আনলোডিং করতে পারে, জাহাজ খারাপ হলে ডকিং করতে পারে এমন স্থান হলো Harbour.
ভৌগোলিক সুযোগ সুবিধা ব্যবহার করে ব্যবসা বানিজ্য স্মুথলি করা ও পন্য পরিবহনের জন্যই পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বন্দর গড়ে উঠছে। আবার প্রতিযোগিতায় ঠিকে থাকার জন্য ও দ্রুত ভালো সার্ভিস দিয়ে অর্থ উপার্জন তথা দেশের উন্নতির জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বন্দর গড়ে উঠেছে বন্দর।
পৃথিবীতে এই বন্দর থেকে বন্দর দেশ থেকে দেশ জাহাজে পন্য পরিবহনে প্রধান রুট দুটি ;
(১) ফার ইস্ট মানে জাপান থেকে সাউথ চায়না সী হয়ে সিংগাপুর হয়ে সোজাসুজি কলোম্বো আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে সুয়েজ ক্যানেল পাড়ি দিয়ে ভূমধ্যসাগর অতপর জিব্রাল্টার প্রনালী দিয়ে আটলান্টিক হয়ে ইউরোপের পশ্চিম উপকূল হয়ে হামবুর্গ(জার্মানী), এন্টিওয়ার্প (বেলজিয়াম) রর্টারডাম (হল্যান্ড) ও স্ক্যান্ডিনেভীয় (সুইডেন,, ফিনল্যান্ড) দেশ পর্যন্ত, একি ভাবে আবার ফিরতি পথে পূর্বের ছেড়ে যাওয়া দেশে আগমন।
(২) অপর দিকে ইউরোপের বৃহৎ বন্দর গুলো থেকে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে হ্যালিফ্যাক্স (কানাডা), নিউইয়র্ক (আমেরিকা) হয়ে ক্যারাবিয়ান দ্বীপ ও মধ্য আমেরিকার দেশের পূর্ব উপকূলীয় বন্দর হয়ে পানামা খাল পাড়ি দিয়ে আমেরিকা ও কানাডার পশ্চিম উপকূল, মেক্সিকো, আবার পূর্ব দিকে কলম্বিয়া, চিলি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা পর্যন্ত।
পৃথিবীর বড় বড় বন্দর যে সকল এলাকায় অবস্থিত তার আশেপাশের দেশের আমদানি রপ্তানি ঐ সকল বন্দর দিয়েই হয়ে থাকে, যেমনঃ
Shanghai (China)ঃ এ সাংহাই বর্তমানে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বন্দর, ২০১৬ সালে এ বন্দর দিয়ে ৩,৭১,৩৩,০০০ টিইইউএস TEUs(Twenty Equivalent Unites) কন্টেইনার উঠানামা করে। বৃহৎ আকারর মাদার ভেসেল ও সকল প্রকার জাহাজ এ বন্দর ব্যবহার করে, আর প্রতিবেশী দেশের আমদানি রপ্তানি ও এ বন্দরের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
Singapore ঃ এ সিংগাপুর বর্তমানে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহৎ বন্দর, ২০১৮ সালে এ বন্দর দিয়ে ৩,৬৬,০০,০০০ টিইইউএস কন্টেইনার উঠানামা করে, এ বন্দরের বার্থ রয়েছে ৬৭ টি, বৃহৎ আকারর মাদার ভেসেল ও সকল প্রকার জাহাজ এ বন্দর ব্যবহার করে, আর প্রতিবেশী দেশ বিশেষ করে বাংলাদেশের আমদানি রপ্তানি ও এ বন্দরের মাধ্যমে হয়ে থাকে। সিংগাপুর ভৌগোলিক ভাবে এমন স্থানে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে যেতে হলে এ বন্দরের পাশ দিয়ে জাহাজ গুলোকে যেতে হয়, ফলে জাহাজ জ্বালানি (Bunkering) নেয়ার উপযুক্ত স্থান, আর সিংগাপুর হলো জ্বালানি সরবরাহ নেয়ার পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বন্দর।
Colombo (Sri Lanka) ঃ এই কলোম্বো বর্তমানে পৃথিবীর আমদানি রপ্তানিতে ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত বন্দর, ২০১৮ সালে এ বন্দর দিয়ে ৭০,০০,০০০ টিইইউএস কন্টেইনার উঠানামা করে এ বন্দরে ৫১ বার্থ রয়েছে, বৃহৎ আকারর মাদার ভেসেল ও সকল প্রকার জাহাজ এ বন্দর ব্যবহার করে। আর তাদের নিজস্ব ছাড়া প্রতিবেশী দেশের আমদানি রপ্তানি ও এ বন্দরের মাধ্যমে হয়ে থাকে, আমাদের দেশের আমদানি রপ্তানির উল্লেখযোগ্য কন্টেইনার এ বন্দরের মাধ্যমে আমদানি রপ্তানি হয়।
Mina Jabel Ali ( Dubai UAE)ঃএটি Jabel Ali বন্দর নামে বেশি পরিচিত, বর্তমানে এটি পৃথিবীর নবম বৃহৎ বন্দর, ২০১৩ সালে এ বন্দর দিয়ে ১,৩৬,০০,০০০ টিইইউএস কন্টেইনার উঠানামা করে। বৃহৎ আকারর মাদার ভেসেল ও সকল প্রকার জাহাজ এ বন্দর ব্যবহার করে। আর নিজস্ব ছাড়া Persian Gulf প্রতিবেশী দেশে যেমন ওমান, কাতার, বাহরাইন, সৌদি আরবের পূর্ব উপকূল, কুয়েত, ইরান, ইরাক আমদানি রপ্তানি + পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশের আমদানি রপ্তানিও এ বন্দরের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
Hamburg (Germany) ঃ এ হামবুর্গ বর্তমানে পৃথিবীর বৃহৎ বন্দর গুলোর অন্যতম ও ইউরোপের তৃতীয় বৃহৎ বন্দর। ২০১৮ সালে এ বন্দর দিয়ে, ৮৭,৪১,০০০ টিইইউএস কন্টেইনার উঠানামা করে। বৃহৎ আকারর মাদার ভেসেল ও সকল প্রকার জাহাজ এ বন্দর ব্যবহার করে। আর এটি হলো বাংলাদেশী গার্মেন্টস পন্য রপ্তানির অন্যতম বন্দর, বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে রপ্তানিকৃত গার্মেন্টস এখানে খালাস করা হয় অতপর এখান থেকে রেল, রোড, বিমান যোগে আশেপাশের দেশ সমুহে প্রেরণ করা হয়।প্রতিবেশী দেশের আমদানি রপ্তানি ও এ বন্দরের ভুমিকা উল্লেখযোগ্য।
Rotterdam ( Netherlands/Hollend) ঃ এ Rotterdam বন্দর এক সময় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বন্দর ছিল বিশেষ করে ১৯৬২ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত একটানা এটি ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বন্দর, বর্তমানে এটি ইউরোপের বড় বন্দর , ২০১৮ সালে এ বন্দর দিয়ে ১,৩৫,৯৮,০০০ টিইইউএস কন্টেইনার উঠানামা করে। বৃহৎ আকারর মাদার ভেসেল ও সকল প্রকার জাহাজ এ বন্দর ব্যবহার করে। নিজস্ব ছাড়া ইউরোপের দেশ সমূহের আমদানি রপ্তানি ও এ বন্দরের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
Antwerp ( Belgium) ঃ এটি বর্তমানে ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহৎ বন্দর, ২০১৮ সালে এ বন্দর দিয়ে ১,০৮,৩০,০০০ টিইইউএস কন্টেইনার উঠানামা করে। সকল প্রকার জাহাজ এ বন্দর ব্যবহার করে। নিজস্ব ছাড়া ইউরোপের প্রতিবেশী দেশের আমদানি রপ্তানি ও এ বন্দরের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
South Louisiana (USA) ঃ এটি আমেরিকার সর্ববৃহৎ বন্দর, এ বন্দর দিয়ে ২০১৩ সালে ১২,৬৮,৫১,২৩৮ সর্ট টন পন্য উঠানামা করে। সকল প্রকার জাহাজ এ বন্দর ব্যবহার করে। আমেরিকা তার নিজের ও ক্যারাবীয় দেশের আমদানি রপ্তানি ও এ বন্দরের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
Vancouver British Colombia (Canada) ঃ এটি কানাডার ও উত্তর আমেরিকার বৃহৎ বন্দর, এ বন্দর দিয়ে বছরে ৩৪,০০,০০০ কন্টেইনার উঠানামা করে। সকল প্রকার জাহাজ এ বন্দর ব্যবহার করে। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য আমদানি বন্দর হয়ে আসে।
Chittagong (Bangladesh )ঃ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বন্দর, এটি ১৮৮৭ সালে স্থাপিত হয়, বর্তমানে বার্থ রয়েছে ৩৬ যার মাধ্যমে ২০১৭-১৮ সালে এ বন্দর দিয়ে ২৮,০৮,০০০ টিইইউএস কন্টেইনার উঠানামা করে।
আমাদের দেশের সিংহভাগ আমদানি রপ্তানি ও এ বন্দরের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
এছাড়া পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য অনেক বন্দর আছে যেমন Yokohama, Kobe (জাপান) Busan (দঃ কোরিয়া), Penang (মালয়েশিয়া), Mumbai (ভারত), Khor Fakkan, Sharjha (ইউ,এ,ই), Port Suez (মিশর), Le Havre ( ফ্রান্স), এ সকল বন্দর দিয়েও প্রচুর পন্য উঠানামা করে এবং এ সকল বন্দর থেকে আমাদের দেশে পন্য আমদানী হয়ে থাকে।
Comments
Post a Comment